থ্রি এএম বই রিভিউ -Three a.m book review in bangla
থ্রি এম বই রিভিউ
3 AM
লেখকঃ নিক পি রোগ।
অনুবাদঃ সালমান হক
প্রকাশনীঃ বাতিঘর
মূল্যঃ১৩০ টাকা
পৃঃ ১০৯
অসাধারণ এই বেষ্ট সেলার থ্রিলার উপন্যাস গুলির স্রষ্টা আমেরিকান লেখক নিক পিরোগ
বাংলায় অনুবাদ করেছেন- সালমান হক
প্রিন্ট খুব ভালো,
হেনরি বিনস এক অদ্ভুত চরিত্র। অদ্ভুত এক রোগে আক্রান্ত সে। দিনে মাত্র ১ ঘন্টা জেগে থাকে,বাকি ২৩ ঘন্টা সে ঘুমিয়ে কাটায়। রাত তিনটা বাজলে সে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। এভাবেই নিরিবিলি চলছিলো তার জীবন। কিন্তু এক রাতে পালটে যায় সবকিছু। পাশের বাড়ি থেকে ভেসে আসে এক মহিলার আর্তচিৎকার। সে দেখতে পায় সম্ভাব্য আততায়ী চলে যাচ্ছে। সে আততায়ি আর কেউ নয় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট! শেষ রাতের ওই ১ ঘন্টা জেগে থাকা অবস্থায় সে খুঁজে বের করতে চাইলো এই রহস্য ।
এক ঘন্টা।
ষাট মিনিট।
তিন হাজার ছয়শ সেকেন্ড।
প্রতিদিন আমার জন্যে কেবল এটুকু সময়ই বরাদ্দ থাকে। এই এক ঘন্টাই আমি জেগে থাকি পুরো চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে। কিন্তু এই ঘটনার পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দিয়ে আমি আপনাদের বিরক্ত করতে চাই না, বরং সরাসরি গল্পে চলে যাওয়া যাক। আর সেই গল্পও একখান! এক ঘন্টার মধ্যেই আমাকে সেটা আপনাদের শোনাতে হবে। কিন্তু তা-ও আপনাদের এটুকু জানিয়ে রাখি, এমন কোন ডাক্তার নেই যাকে আমি দেখাইনি, আর যত প্রকারের ওষুধ কারো পক্ষে খাওয়া সম্ভব আমি খেয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আমি প্রতিদিন রাত তিনটায় ঘুম থেকে উঠি আর এর এক ঘন্টার মধ্যেই আবার ঘুমিয়ে পড়ি। এরপর টানা তেইশ ঘন্টা ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেই। পরের দিন আবার রাত তিনটায় জেগে উঠি। এভাবেই চলছে আমার জীবন। জানি, এরকম জীবনে হয়ত বেশি কিছু করা যায় না, কিন্তু এটাই আমাকে মেনে নিতে হয়েছে।
আমার বয়শ এখন ছত্রিশ। এই বয়সে অন্যরা প্রায় ২০০০০০ ঘন্টা জেগে কাটিয়েছে। কিন্তু আমি এই সময়ে জেগে ছিলাম ১৪,০০০ ঘন্টারও কম। একটা তিন বছরের বাচ্চার চেয়েও কম। ডাক্তারদের মতে, পুরো পৃথিবীতে মাত্র তিনজন মানুষ আছে যারা কিনা আমার মত এরকম একই মেডিকেল কন্ডিশনের ভুক্তভোগি। হ্যা, মেডিক্যাল কন্ডিশন—এইটাই বলে তারা। কোন রোগ না, কোন অসুস্থতা না, শুধু একটা মেডিক্যাল কন্ডিশন। তাইওয়ানের একটা বাচ্চা মেয়ের আছে এই কন্ডিশন আর আইসল্যান্ডে একটা ছেলের। কিন্তু এই কন্ডিশনের নামকরণ করা হয়েছে আমার নাম অনুযায়ি। কারণ আমার ব্যাপারটাই প্রথম নজরে এসেছিল সবার। হেনরি বিনস-এটাই বলা হয় এই কন্ডিশনকে। আমি হেনরি বিনস আর আমার হেনরি বিনস আছে-বাহ!
যা-ই হোক, আপনারা হয়ত এতক্ষনে ভেবে অবাক হচ্ছেন, আমি আপনাদের এই গল্পটা কিভাবে শোনাচ্ছি যেখানে আমার একটা বাক্যই ঠিকভাবে গুছিয়ে বলতে পারার কথা নয়। যেহেতু আমি খুব কম সময়ই জেগে কাটিয়েছি। আসলে, কিভাবে আর নিজের সম্পর্কে বলব-আমি একজন প্রডিজি, সাধারণ মানুষের তুলনায় আমার মগজ একটু বেশিই কাজ করে। হয়ত স্রষ্টা আমাকে এভাবেই পুষিয়ে দিয়েছেন-হেনরি বিনসের যেহেতু হেনরি বিনস আছে তার মগজটা না-হয় একটু বেশিই চলুক।