স্কুল-কলেজের শিক্ষাসফরগুলো যেখানে হওয়া উচিৎ

 স্কুল-কলেজ জীবনের শিক্ষাসফর


স্কুল কলেজ জীবনে থাকে শিক্ষা সফর, থাকে পিকনিক। 

আর বেশিরভাগ সময় কোথায় হয় সেই পিকনিক বা শিক্ষাসফরগুলো???????

একটু নজর দিলেই দেখতে পারবেন।

শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করা হয়, তোমরা এবার কোথায় যেতে চাও শিক্ষাসফরে???

তারা বলে স্যার, আমরা চিড়িয়াখানায় যেতে চাই। 

কেউ বলে, স্যার, বোটানিকেল গার্ডেন যেতে চাই। 

কেউ বলে স্যার সমুদ্র দেখতে যেতে চাই। 

কেউ বলে স্যার পাহাড় দেখতে যাবো। 

কেউ বলে স্যার, বন দেখতে যাবো, 

কেউবা মত দেয় সিলেটের চা বাগানে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি....... 


খুব ভালো।  দেশ ঘুরবে, বিভিন্ন জিনিস দেখবে, শিখবে এটা তো খুবই ভালো। 

তবে এই ব্যাপারে আমার নিজস্ব মতামত হচ্ছে ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ


একটা স্টুডেন্ট স্কুলে পড়ার সময় তারা ইউনিভার্সিটি কিংবা মেডিকেল কলেজ এগুলোর নামই শুনে থাকে। আবার অনেকে এগুলোর নামই শুনে না। 

 কলেজে পড়ার সময় প্রায় সবারই স্বপ্ন হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা মেডিকেলে পড়ার।।  কিন্তু তাদের এসব চিন্তা আসে মানুষের কাছ থেকে সেসব প্রতিষ্ঠানের সুনাম বা সফলতার কথা শুনে। 

ইউনিভার্সিটি কেমন হতে পারে তখন তা খুব অল্প সংখ্যক ছেলেমেয়ে এটা কিছুটা জানে। কিন্তু বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই জানে না।  এইচএসসি পরীক্ষার পরে ভর্তি হয় কোচিং-এ । কেউবা বাসায়ই প্রিপারেশন নেয় ভর্তিপরীক্ষার জন্য।  তখন কোচিং এর ভাইয়াদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোমাঞ্জকর ক্যাম্পাসের কাহিনী শোনা যায়। ক্যাম্পাসের বন্ধু-বান্ধবী দের বর্ণনা শোনা যায়। ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ণনাও করেন ভাইয়ারা।সেই সাথে ভর্তি পরীক্ষার সময়ের যুদ্ধের কথাও বলেন৷  কয়েক হাজার সীটের জন্য কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করে৷ লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সেখানে খুব সীমিত সীট থাকে। । তাও স্বপ্ন দেখানো হয় ভর্তিযুদ্ধ বিজয়ের।  তখন প্রতিটি ছেলে মেয়ের চোখে স্বপ্ন জেগে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মেডিকেল কলেজে পড়ার৷ তখন ঘুমাতে গেলেও মনে হয় পড়তে হবে, কিন্তু সেই মোটিভেশন একটু পরেই বিলীন হয়ে যায়। এভাবে ভর্তিপরীক্ষার সময় এসে যায়।  খুব বেশি ভালো প্রিপারেশনও হয়না।  ভর্তি পরীক্ষার সময় যখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সীট পরে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। তখন যায় কোথায় সীট পরেছে তা দেখার জন্য৷  কেউ বা পরীক্ষার দিনই আগে গিয়ে নিজের সীট খোঁজে। 

সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেই মনে হয় এ যেন এক ভিন্ন রাজ্যে  এসে পৌঁছালাম৷  তখন চান্স পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাটা আরও কয়েক হাজারগুন বেড়ে যায়।  তখন মনে হয় কেনো যে বিশ্ববিদ্যালয় দেখার জন্য আগে আসিনি 😢😢😢😢😢 আজ এসেই মায়ায় পরে গেলাম 😢 আগে যদি জানতাম বিশ্ববিদ্যালয় এরকম তবে হয়তো আরও অনেক পড়াশোনা করতাম। কিন্তু তখন নতুন করে প্রিপারেশন নেওয়ার সময় থাকে না। কিন্তু একটা আবসুঝ থেকেই  যায়। 

তাই আমার মতে স্কুল কলেজের স্টাডি ট্যুর(শিক্ষাসফর) বা পরিবার থেকে তাদের সন্তানদের ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার স্থানগুলি  হওয়া দরকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে । অন্তত ছেলেময়েগুলির পড়ার উৎসাহ বাড়বে  । পড়তে মন বসবে। স্বপ্ন দেখতে শিখবে। সেখান থেকে যে মোটিভেশন পাবে সেটা সব থেকে বেশি কাজে লাগবে। 


★★★যদি বাংলাদেশের জাতীয় যাদুঘর দেখতে চান, চলে যান ঢাকার শাহবাগে। তার সাথেইতো রয়েছে  বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়,প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানেই রয়েছে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর কবর৷   ট্যুর টা সেখানে করেন।  কাজে লাগবে।।।


★★যদি চান বাংলাদেশের প্রথম যাদুঘর বরেন্দ্র গবেষণা যাদুঘর দেখবেন চলে আসুন আমের এলাকা,সিল্কের এলাকা, শিক্ষারনগরী রাজশাহী।  সেই সাথে ঘুরে যান প্রাচ্যের ক্যামব্রীজ এবং বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে৷।  । যেখানে রয়েছে শহীদস্মৃতি সংগ্রহশালা এবং বাংলাদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী বিপ্লবী স্যার সামসুজ্জোহা এর কবর । 

বরেন্দ্র যাদুঘর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ই পরিচালনা করে । 


★★★যদি চান বাংলাদেশের স্মৃতিসৌধ দেখবেন সাভার নবীনগর যাবেন।  তার কাছাকাছি রয়েছে জাহাংগীরনগর।  শীতের মৌসুমে সাইবেরিয়া থেকে আসা হাজার হাজার পাখি দেখতে চাইলে,  প্রাকৃতিক অপরূপ সুন্দর্যমন্ডিত বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাংগীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার,ঢাকা। চলে যান। 


★★★যদি চান যে বিভিন্ন পাহাড় দেখবেন, তাহলে চলে যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ।  অনেক পাহাড় দেখতে পারবেন, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়টিই পাহাড়ের উপর নিচে।  বনও  দেখতে পারবেন, সেই সাথে যাদুঘরও দেখতে পারবেন৷ 


★★★চা বাগান দেখতে সিলেট যাবেন!!!!!সিলেট যেহেতু যাবেনই শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘুরে আসুন।। 


★★★কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত দেখতে গেলে, সেখান থেকে পটুয়াখালী বিজ্ঞানও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও যান। 











তারছাড়া আরও অনেক আছে। ।। 


যদি শিক্ষাসফরগুলি প্রথম দিকে এসব জায়গায় হয় তাহলে স্কুল এবং কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জীবনে অনেক কাজে লাগবে। 


আর বিশেষ করে যারা  এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিতেছো তোমরা পরীক্ষা শেষ করেই বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখো,কাজে লাগবে৷

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url