ফোকলোর কি?(What is Folklore?)ফোকলোরে কি পড়ানো হয়?

ফোকলোর পরিচিতি

ফোকলোর হলো ফোক এবং লোর এই দুটির সমন্বয়। ফোক মানে হচ্ছে লোক,  যারা মূলত একই ভৌগোলিক পরিসীমাতে অবস্থান করেন, যাদের ভাষা এবং সংস্কৃতি একই ধরণের। অন্যদিকে লোর হচ্ছে লোক সম্পর্কিত জ্ঞান।

 "যার কল্যাণে ফোকলোর শব্দটি বর্তমান বিশ্বে ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করেছে, তিনি উইলিয়ম জন থম্স্ (William John Thoms). Folklore শব্দটি তিনিই সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন। ১৮৪৬ সালে থম্স্ ইংল্যান্ডের দি অ্যাথেনিয়াম পত্রিকায় লিখিত একটি পত্রে শব্দটি প্রথম উল্লেখ করেন।" ১

ফোকলোরের সংজ্ঞা ও শ্রেণীকরণ করণের ব্যাখ্যা জানতে এখানে ক্লিক করুন...


এখন বিভিন্ন পন্ডিতদের সংজ্ঞা দেওয়া 

♻️ Definition of Folklore🔍  

1. Folklore is the material that is handed on by tradition either by the word of mouth or by

customs and practices. It maybe folksongs, folk tales, riddles, proverbs and other material

preserved in words. It maybe traditional tools and physical object like fences or knots.

 Ref: Archer Taylor : Folklore and the student of literature, the Pacific of spectator vol-2, 1948

2. Folklore is an echo of the past and at the same time it is the vigorous voice of the

present.

 Ref::Rush Folklorist, Y.M Sokolov.

3. Folklore is the artistic communication in small group.

 Ref: Dan-Ben-Amos.

4. Culture is the essence of civilization and folklore is the mirror of culture.

5. Folklore is the backbone of culture.

6. Folklore is the balancing force of culture.

7. Folklore is the stimulation and forceful agent of culture.

8. Folklore is the pulse of the people and vehicle of social change.

Ref(4-8) : "বিবিত্র দৃষ্টিতে  ফোকলোর" ড.মযহারুল ইসলাম, জাতীয় ফোকলোর কনফারেন্স -১৯৯২।

এছাড়া ড.আশরাফ সিদ্দিকী তার কিশোরগঞ্জের লোককাহিনী এর ভূমিকায় উল্লেখ করেন, 

"যা কিছু লোক ঐতিহ্যের মাধ্যমে চলে এসেছে কাহিনী,পুরান,ছড়া,সংগীত, চারুশিল্প,কারুশিল্প ইত্যাদি লোকসংস্কৃতি বা ফোকলোর। " 

আপনার কি পড়া সহজে মূখস্ত হয়না? কিভাবে পড়লে সব মনে থাকে আর কোন সময় পড়লে অতিসহজে মূখস্ত হয়?

জানতে এই লেখাটি পড়ুন How to memorise something very quickly? Click here to know.

তবে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয় যে ফোকলোরের অনেক গুলো প্রতিশব্দের কথা পন্ডিতগন উল্লেখ করলেও, শেষ পর্যন্ত ফোকলোরকে ফোকলোর রাখাই শ্রেয় বলে মনে করেন, কারণ এর ১০০ভাগ সঠিক প্রতিশব্দ পাওয়া যায়না, যার দ্বারা ফোকলোরের ভাব সম্পু্র্ণরূপে প্রকাশ করা যায়। যদিও ইংলিশ ডিকশনারী অনুযায়ী  Folklore এর অর্থ লোকাচারবিদ্যা।  যেহেতু ফোকলোরের কাজ হচ্ছে মানুষ,সংস্কৃতি,সমাজ নিয়ে তাই এটি মূলত সামাজিক বিজ্ঞানেরই অংশ। 

মোস্তফা তারিকুল আহসান স্যার এর ভাষ্য অনুযায়ি,

"ফোকলোর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিষয় হিসেবে বাংলাদেশের জাতিতাত্ত্বিক ইতিহাস, সংস্কৃতি, আবহমান জীবনধারা, পুরাতত্ত্ব, লোকজ সংস্কৃতি, লোকশিল্প, সংগীত, ধর্ম, নৃত্য, ক্রীড়া এবং আধুনিক জীবনধারার সঙ্গে সংযুক্ত নানা জীবনাচরণ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সারা বিশ্বের কারিকুলামের নির্যাস নিয়ে এবং বাংলাদেশের লোকজ জীবনধারার সমন্বয়ে সমাজ-সংস্কৃতি বিষয়ে আধুনিক পঠনপাঠন ও গবেষণার লক্ষ্যে এ বিভাগ কাজ করছে। " ২

মানুষের জীবন যেরকমভাবে সব সময় একরকম থাকেনা,তদ্রুপ সংস্কৃতিও একইরকম থাকেনা। কালে কালে এর রূপ বদলায়।

ফোকলোর চর্চার প্রয়োজনীয়তা জানতে এখানে চাপ দিন

"শিল্প-বিপ্লব-পূর্ব কৃষিসমাজের নিজস্ব একটি সংস্কৃতি ছিল। এই সংস্কৃতিকে বলা হতো লোকসংস্কৃতি। এই সমাজ ছিল সংহত সমাজ। এই সমাজের মানুষের বিশ্ববোধ, ধর্ম, আচার-অনুষ্ঠান, বিশ্বাস ও নানা করণক্রিয়া, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ধরন, উৎসব—সবকিছু মিলিয়েই ছিল একটি সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতিকেই তখন বলা হতো লোকসংস্কৃতি। এই সংস্কৃতিতে জীবন এবং শিল্প ছিল একাত্ম। এই সময়ের শিল্পে নান্দনিক বোধের সঙ্গে উপযোগিতা এবং সামাজিক পরিবেশজাত নানা উপাদান-উপকরণ মিলে যাপিত জীবনের একটি কাঠামো নির্মিত হয়েছিল। শিল্প-বিপ্লবের পর এই কাঠামোতে ভাঙন ধরতে থাকে। গ্রামীণ জীবনেও আসে পরিবর্তন এবং নগরজীবনে তো নতুন শিল্পসমাজের এক নবীন সংস্কৃতিরই আবির্ভাব ঘটতে শুরু করে। এই যে গ্রামীণ সংস্কৃতির পরিবর্তন এবং নতুন একটি সংস্কৃতির উদ্ভব—এই দুইয়ের সম্পর্কসূত্র নির্মাণ এবং এদের মধ্যে বিরোধ ও সমন্বয়ের বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়নই ফোকলোরবিদের কাজ। অতএব যেকোনো চিন্তাশীল মানুষই বুঝতে পারবেন বিষয়টি জটিল, এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বিজ্ঞানসম্মত অনুসন্ধানজাত এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে পরিশ্রমসাধ্য ও অকুস্থল পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা। তাই এই বিষয়টিকে তুচ্ছ ভাবার বা প্রান্তিকবিদ্যা হিসেবে আখ্যাত করার কোনো সুযোগ নেই। একটি গুরুতর সামাজিকবিদ্যা হিসেবেই এটি পাশ্চাত্যবিশ্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আমাদের এশীয় অঞ্চলেও ধীরে ধীরে এই বিদ্যা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন এবং উচ্চতর প্রতিষ্ঠান বা ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ লাভের সূচনা হচ্ছে। এর প্রয়োজন ছিল দেশের সামগ্রিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্যিক বিষয় গভীরভাবে উপলব্ধি করার জন্য ফোকলোরের জ্ঞান বিশেষ জরুরি। এই বিষয়টি উপলব্ধি করেই উন্নত বিশ্ব বিশেষ করে জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক—এসব দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোকলোরের উচ্চতর কোর্স চালু করা হয়েছে।

ফোকলোর সাধক আশুতোষ ভট্টাচার্য ফোকলোর চর্চায় আশুতোষ ভট্টাচার্যের অবদান জানতে এখানে ক্লিক করুন

উন্নত বিশ্বের ফোকলোরচর্চায় এখন আগের মতো গ্রামীণ কৃষিসমাজের বিষয়-আশয়ই শুধু অধ্যয়ন করা হয় না, নাগরিক সমাজে বিকাশমান চিত্রেরও অনুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকের প্রথম দিক পর্যন্ত ফোকলোরচর্চায় গ্রামীণ ঐতিহ্য এবং তার নানা বিষয় নিয়ে রোমান্টিক আলোচনা এবং ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণই প্রাধান্য পেয়েছিল। ঐতিহ্যের অহংকার এবং গ্রামজীবনের কল্পিত সৌন্দর্যকেও বড় করে দেখানোর চেষ্টা সেখানে ছিল। এখন পদ্ধতিগত পরিবর্ধন ঘটে গেছে। এখন বাস্তব দৃষ্টিতে সূক্ষ্মভাবে নতুন সামাজিক পরিবর্তনের অনুষঙ্গে যে নতুন কৌতুক, দেয়াললিখন, দেয়াল চিত্রণকলা, ফেসবুকের কোনো কোনো বিষয় এবং অন্তর্জালের নানা কথনও নতুন ফোকলোরের বিষয় হয়েছে। জার্মানির বিখ্যাত তাত্ত্বিক হারমান বউজিঙ্গার এ বিষয়ে খুবই উল্লেখযোগ্য একটি গ্রন্থ লিখেছেন। গ্রন্থটির নাম কালচার ইন এ ওয়ার্ল্ড অব টেকনোলজি। আমাদের সাধারণ লোক এমনকি শিক্ষিত লোকদেরও ধারণা, ফোকলোর নিতান্তই একটি গালগল্পের এবং কুসংস্কার ও অতিকথনের বিষয়। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে এ ধরনের ধারণা একেবারেই অবাস্তব। সমাজ, সমাজ পরিবর্তন এবং নতুন বিশ্ববীক্ষা সম্পর্কে ধারণার অভাবেই তাঁদের এ ধরনের মতামত প্রকাশ করতে দেখা যায়।এটা ঠিক যে, কুসংস্কারও ফোকলোরচর্চার একটি বিষয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই বটে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, কোনো আধুনিক ফোকলোরবিদ কুসংস্কারে বিশ্বাস করেন। বরং প্রকৃত ঘটনা হলো, একটি সমাজে কেন একটি বিশেষ ধরনের কুসংস্কার চালু হয়েছে, তার বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখানোই ফোকলোরবিদ্যাব্রতীর আসল কাজ। এখানেই তার সামাজিক মনস্তত্ত্ব এবং সমাজ মানসের গভীরতর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ আবশ্যিক। যিনি এ ধরনের বিষয়কে বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারেন, তিনিই প্রকৃত ফোকলোরবিদ। গ্রামীণ খেলাধুলা বলুন বা লোকশিল্প বলুন বা লোকগল্প বা লোকপুরাণই বলুন—সবকিছুই ফোকলোরের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো আমাদের ইতিহাসের অংশ, ঐতিহ্যেরও অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু এর গভীরতর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ঐতিহাসিকেরা করেন না, নৃতাত্ত্বিকেরা করেন এবং ফোকলোরবিদেরাও করেন।এ জন্যই বহির্বিশ্বে ফোকলোরকে এত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়।আমাদের অনেক পণ্ডিত ব্যক্তিও মনে করেন, প্রযুক্তির এই জগতে ফোকলোরের কোনো গুরুত্ব নেই। কিন্তু এই বক্তব্য মোটেই যথার্থ নয়। বরং ফোকলোর আগে যেমন গ্রামীণ সমাজের মধ্যেই প্রধানত সীমাবদ্ধ ছিল, এখন আর তা নেই। বিশ্বব্যাপী এর নব–উত্থান ঘটেছে এবং সেই উত্থানে প্রযুক্তির ভূমিকাও সামান্য নয়। তাহলে কথা এই দাঁড়ায়, প্রযুক্তিগত বিশ্বে ফোকলোর তুচ্ছ নয়, প্রান্তিক নয়, সামান্য নয় বরং বিশেষভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক সমাজকে বুঝতে হলে, নগরায়ণের চারিত্র্যগুলো উপলব্ধি করতে হলে এবং একালের মানুষের মনোভাব জানতে হলে ফোকলোরের জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যই জার্মানির তুবেনগিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত অধ্যাপক ও প্রগাঢ় ফোকলোর পণ্ডিত হারমান বউজিঙ্গার তাঁর উপর্যুক্ত বইয়ে ফোকলোরের নতুন যে তথ্যটি দিয়েছেন, তাতে নানা উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, ফোকলোর নিঃশেষিত হয়নি, লুপ্ত তো হওয়ার প্রশ্নই নেই বরং প্রযুক্তির যুগে এর বহুল বিস্তার ঘটেছে। নাগরিক ফোকলোর প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, নগরের ঘিঞ্চিগলি, ঠাসাঠাসি করা মানুষ, দূষিত জলবায়ু, নানা গোষ্ঠীর মানুষ, তাদের বিচিত্র ভাষা এবং নিজ অঞ্চল থেকে নিয়ে আসা নানা লোকগল্প, কাহিনি, ধাঁধা, প্রবাদ, গান শহর অঞ্চলেই ফোকলোরের নতুন আবাসনস্থল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আগে যেমন গ্রামে ছিল খোলা মাঠ, পরিষ্কার আকাশ, ঐতিহ্যগত কৃষি খামার, তার বিপরীতে নতুন সামাজিক এই ব্যবস্থাই আধুনিক ফোকলোরচর্চার উপাদান। সেই সঙ্গে অন্তর্জাল, কম্পিউটার, অনলাইনে নানা বিষয়, কমিকস পত্রিকা, নানা রকম কৌতুক প্রভৃতি ফোকলোরের নতুন উপাদান হিসেবে উদ্ভূত হয়েছে। এখনকার ফোকলোরবিদেরা বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে এসব উপাদানের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করছেন। সেই সঙ্গে গ্রামীণ এবং নাগরিক ফোকলোরের বিষয়গত বৈশিষ্ট্য এবং চারিত্র্য-লক্ষণ নিয়েও আলোচনা করবেন। এভাবেই আমাদের এখনকার সমাজের গভীরতল পর্যন্ত ফোকলোরচর্চার মধ্য দিয়ে জানা সম্ভব হবে। অতএব ফোকলোরচর্চা শুধু আধুনিকই নয়, বিজ্ঞানভিত্তিক একটি মানবিকচর্চার বিষয়ও বটে।

আমাদের দেশের নাগরিক ফোকলোরের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া যায়। আগে গ্রামীণ মেলা হতো, এখনো হয়। কিন্তু আগের গ্রামের মেলার সঙ্গে এখনকার গ্রামীণ মেলার অনেক পার্থক্য ঘটে গেছে। সেই বিষয়টি বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে। একজন ফোকলোরবিদ সেই কাজ করবেন। অন্যদিকে, পয়লা বৈশাখে আগে গ্রামে যে ধরনের মেলা হতো, এখন নগরের বৈশাখী মেলা তার চেয়ে আঙ্গিকে, বৈশিষ্ট্যে এবং বিষয়ে বিপুল পরিবর্তনকে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। এখন রমনার বটমূলে যে বৈশাখী মেলা হয়, তা শুধু বাঙালির ঐতিহ্যের নবনির্মাণই শুধু নয়, বরং বাঙালি জাতির আত্মপ্রকাশের এক নতুন ধারা। এই মেলার আনন্দ মিছিল শুধু এক বিশাল উৎসবই নয়, এর মুখোশ, তৈরি করা হাতিঘোড়ার অবয়বের ব্যবহার, সামাজিক পরিস্থিতিরও বিশ্লেষণ বটে। এতে কৌতুক আছে, সমাজ-সমালোচনা আছে এবং রাজনীতির তির্যক ব্যাখ্যাও আছে। চারুকলা অনুষদের দেয়ালে ছাত্রছাত্রীদের যে দেয়ালচিত্রণ দেখা যায়, তা শুধু একটি নান্দনিক উপস্থাপনা নয়, সমাজকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার এক নতুন মাধ্যমও বটে। শহীদ মিনার, প্রভাতফেরি, সংশ্লিষ্ট আল্পনা এবং দেয়াললিখনও ফোকলোরের নবনির্মাণেরই অংশ। এর প্রকৃত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করাই আধুনিক ফোকলোরের কাজ।" ৩

লোক বিশ্বাস ও লোক সংস্কার বলতে কি বোঝায়? জানতে এখানে ক্লিক করুন।

ফোকলোরকে বলা হয় মাল্টিডিসিপ্লিনারি বা

"‘বহুমুখী বিদ্যা শৃঙ্খলা’ (A multi academic disciplinary)। ফোকলোরের শিক্ষাগত শৃঙ্খলা ও বিষয় পরিধি বিশ্লেষণ করলেও ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, সমাজতত্ত্ব, মনস্তত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, প্রত্নতত্ত্ব, নন্দনতত্ত্ব, জাদুঘরতত্ত্ব, পর্যটনবিদ্যা এবং অডিও-ভিজ্যুয়ালসহ বিভিন্ন জ্ঞাতিবিদ্যার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়" 



এখন ফোকলোরের সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা দেওয়া যাক,তাহলেই মোটামুটিভাবে ফোকলোরের পরিধি সম্পর্কে আচ করা যাবে।


প্রথম বর্ষের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত কোর্সসমূহঃ 

Introdution to Folklore

 History of Folklore Study in Bengal

The outline of Bengali literature: Ancient and Medieval,

 Introductiont to Sociology

Socio-Economic and Cultural

History of Bangladesh (Ancient- 1757 AD)

Functional Bengali.


এর মধ্যে শেষোক্ত কোর্স দুটি পঞ্চাশ নম্বরের এবং অবশিষ্ট কোর্সসমূহ ১০০ নম্বরের। প্রথম বর্ষে ক্ষেত্রসমীক্ষা এর জন্য রয়েছে ৫০ নম্বর।

দ্বিতীয় বর্ষের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত কোর্স শিরোনামসমূহ:

Folk Theater

 Folk-Rhymes, Riddles and Proverbs,

Socio-Economic and Cultural History of Bangladesh (1757- 1971 AD)

Folk Festival and Rituals 

Audio-Visual Media and Folk Media

Modern Political Development and Related Issues,

Folklore Research Methodology-1,

Functional English.


দ্বিতীয় বর্ষেও  Fieldwork and Research Report এর জন্য রয়েছে ৫০ নম্বর।

তৃতীয় বর্ষের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত কোর্স শিরোনামসমূহ

Folk Life of Bengal, 

Folk Song,

 Folk Narrative and Myth, 

Folklore Research Methodology-2,

 Performing folklore: 

 a. Folk Dance 

b. Folk Game, 


Cultural Anthropology, 

folklore and Aesthetics,

 Archiving and Museology.

তৃতীয় বর্ষেও Fieldwork and Research Report এর জন্য রয়েছে ৫০ নম্বর।

চতুর্থ বর্ষের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত কোর্স শিরোনামসমূহঃ

Folk Religions,

 Philosophy and Folk Cult,

 Folk Ballad,

 Folk Art and Artisans, 

Folk Science-Technology and Folk Treatment,

 Folklore: Communication and Development,

 Ethnic Group and Ethnology,

 Socio-Linguistics and Folk Language. 


চতুর্থ বর্ষেও Fieldwork and Research Report এর জন্য রয়েছে ৫০ নম্বর।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগে এক বছর মেয়াদি এম এস এস কোসের্র পাঠ্যক্রম ৬০০ নম্বরের। শিক্ষার্থীদের জন্য ০৯ টি কোর্স রয়েছে। প্রতিটি লিখিত কোর্সকে ৫০ নম্বরের পূর্ণ ইউনিট কোর্স হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। ০৯ টি কোর্স-ই বাধ্যতামূলক। ৬০০ নম্বরের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ থাকে (০৯ X ৫০ নম্বর)= ৪৫০ নম্বর। গবেষণা প্রতিবেদনের উপরে রাখা হয়েছে ৫০ নম্বর। লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই গবেষণা প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটির সভাপতির নিকট জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অবশিষ্ট ১০০ নম্বরের মধ্যে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন পরীক্ষা (২ X ১২.৫ নম্বর) ২৫ (পরীক্ষা কমিটির আয়োজনে চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরুর ন্যূনতম দু’মাস পূর্বে) এবং মৌখিক পরীক্ষার জন্য ৫০ নম্বর নির্ধারণ করা থাকে।

এম এস এস কোর্স-শিরোনাম

আন্তর্জাতিক ফোকলোর চর্চার ধারা (International Trend of Folklore Study), 

প্রায়োগিক ফোকলোর (Applied Folklore and development), 

জেন্ডার এবং ফোকলোর (Gender and Folklore),

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (Cultural Heritage of Bangladesh),

তুলনামূলক ফোকলোর (Comparative Folklore), তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব  (Comparative Theology),

নগর ফোকলোর (Urban Folklore) এবং

 পেশাগত ফোকলোর (Occupational Folklore), 

cultural Studies.

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের পাঠ্যক্রমের প্রতিটি শিক্ষাবর্ষেই Fieldwork and Research Report এর উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। দেশ, জাতি এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে উপরোক্ত কোর্সমূহ যুগোপযোগী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।"

বাংলাদেশের বাইরে ফোকলোর পঠনপাঠনঃ




"আন্তর্জাতিক বিশ্বে ফোকলোরের পঠন-পাঠনের বিষয়টি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে আমেরিকার Indiana University ,
Pennsylvania,
Texas, 
California,
Western Kentucky University;
ফিনল্যান্ডের Helsinki,
Turku University 
এবং ভারতের Kallayani, Madras, Gounhati Assam, Kerala, Madurai Kamaraj University সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোকলোর পাঠ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত।" ৪

আরও পড়ুন

★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★


বাংলাদেশের বাইরে যেখানে ফোকলোর পড়ানো হয়:

ফোকলোর পড়ানো হয়, ফোকলোর কোথায় কোথায় পড়ানো হয়




তথ্যসূত্রঃ

 ★সংজ্ঞার রেফারেন্স সংজ্ঞার সাথেই উল্লেখিত।

১.kanakfolk


২.Ittefaq


৩. 

ফোকলোরচর্চার সেকাল ও একাল

শামসুজ্জামান খান

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ০০:৪০ 

আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ০০:৪১, প্রথম আলো

৪.



Next Post Previous Post
2 Comments
  • RU folklore 21
    RU folklore 21 ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ এ ১১:২৫ PM

    অসাধারণ একটা লেখা... পড়ে উপকৃত হলাম

    • নামহীন
      নামহীন ২ জানুয়ারী, ২০২১ এ ১০:৩৫ PM

      ধন্যবাদ বন্ধু

Add Comment
comment url