সমাজ সংস্কারে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের অবদান

সমাজ সংস্কারে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের অবদান 

রোকেয়া,বেগম রোকেয়া,রোকেয়ার সাহিত্য, বেগম রোকেয়ার সংস্কারে অবদান,সমাজ সংস্কারে বেগম রোকেয়া


মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধাংশ নারী বাংলাদেশে নাারী-পুরুষের সংখ্যা পুরুষ : .১০ কোটি মহিলা : .০৭ কোটি

সমাজে নানা রকম কুসংস্কার,অনাচার,অপরাধ হয়ে থাকে আর তখনই সমাজকে সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্যে প্রয়োজন হয় সমাজ-সংস্কারের নারীদের বাদ দিয়ে অর্থাৎএই বিশাল অংশকে বাদ দিয়ে আদৌ কি উন্নয়ন সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব নয় একটি মা,রাষ্ট্র বা দেশকে সুন্দর উন্ন করতে হলে এই বিশাল জনশক্তিকে উপেক্ষা করার কোনো পথ নেই

তাই কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর নারী কবিতায় বলেন,

সাম্যের গান গাই-

আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!

বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,

অর্ধেক তার করিয়াছে নারীঅর্ধেক তার নর

বিশ্বে যা কিছু এল পাপ তাপ বেদনা অশ্রুবারি,

অর্ধেক তার আনিয়াছে নর অর্ধেক তার নারী। ২

একসময় আরব দেশে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়াকে লজ্জাকর মনে করা হতো শুধু তাই নয় কন্যা সন্তান জন্ম নিলে তাঁকে জীবিত মাটিতে পুতে ফেলা হতো তখনই বিশ্ব শান্তির দূত হযরত মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) পৃথিবীতে এসে এই প্রথার পরিবর্তন করেন এক সাহাবী তাঁকে মা-বাবার সম্মানের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি পরপর তিনবার মায়ের কথা বলেন, চতুর্থবার  বাবার কথা বলেন

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন তাঁর লেখনিতে বলেন,

"আপনারা বিবেচনা করে দেখুন, হযরত মোহাম্মদ (.) তেরশত বৎসর পূর্বে শিক্ষার উপকারিতা সম্বন্ধে কী বলেছিলেন- বিদ্যাশিক্ষা কর, যে বিদ্যাশিক্ষা করে সে নির্মল চরিত্রের অধিকারী হয়, যে বিদ্যাচর্চা করে সে আমার স্তব করে, যে বিদ্যা অন্বেষণ করে সে উপাসনা করে ... বন্ধু সভায় বিদ্যা অলংকার স্বরূপ, শত্রু সম্মুখে অস্ত্রস্বরূপ ... যাঁহারা মোহাম্মদের (সা.) নামে প্রাণদানে প্রস্তুত হন, তারা তাঁর সত্য আদেশ পালনে বিমুখ কেন? ... কন্যাকে শিক্ষা দেওয়া আমাদের প্রিয় নবী ফরজ অবশ্য পালনীয় কর্তব্য বলিয়াছেন, তবু কেন তাঁহার কন্যারা শিক্ষায় উদাসীন? (মতিচুর ২য় খন্ড)"

রোকেয়া পর্দা প্রথার বিরোধী ছিলেন না তবে গোড়ামির বিরোধী ছিলেন তিনি উগ্র নারীবাদীদের মতো বোরকা ছিঁড়ে ফেলে দেননি বরং তিনি সমাজের কথা চিন্তা করে বোরকা প্রথা মেনে চলতেন কেননা তাঁর আসল উদ্দেশ্য ছিল সমাজকে আগে জাগিয়ে তোলা৷ "

মেয়েদের অভিভাবকরা যাতে তাদের স্কুলে পাঠায় তার জন্য তিনি নিজে পর্দা করে, বোরখা পরে মেয়েদের বাড়ি বাড়ি যেতেন

যাই হোক, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারীর শক্তি প্রজ্জ্বলিত করে এবং সামাজিক নানা কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে সমাজ-সংস্কারে বিশাল ভূমিকা পালন করেছে

দু'হাজার চার সালে বিবিসি বাংলা একটি 'শ্রোতা জরিপ'-এর আয়োজন করে। বিষয়টি ছিলো - সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে?৩০ দিনের ওপর চালানো জরিপে শ্রোতাদের ভোটে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ২০জনের জীবন নিয়ে বিবিসি বাংলায় বেতার অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় ২০০৪-এর ২৬শে মার্চ থেকে ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত।বিবিসি বাংলার সেই জরিপে শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ কুড়িজন বাঙালির তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে আসেন রোকেয়া

বাঙালির আধুনিক যুগের ইতিহাসে যে নারীর নাম গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় সেই নাম হচ্ছে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনবাঙালি সমাজ যখন নারী শিক্ষায় উদাসীন এবং সামাজিক কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিল, সেই সময়  রোকেয়া বাংলার মুসলিম নারী সমাজে শিক্ষার আলো নিয়ে এসেছিলেন। বাঙালি মুসলমান নারী জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম একজন পথিকৃৎ।

নারী জাগরনের অগ্রদূত বলে আমরা যাকে জানি তাঁর আসল নাম "বেগম রোকেয়া" নয়, রোকেয়া খাতুন। তাঁর পিতা সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী "জহির উদ্দীন আবু আলী হায়দার সাবের" বহু ভাষায় সুপন্ডিত হলেও মেয়েদের ব্যাপারে তিনি খুবই রক্ষণশীল ছিলেন৷ এরকম একটি রক্ষণশীল পরিবারে ১৮৮০ খ্রীস্টাব্দে ৯ই ডিসেম্বর রংপুর জেলার,মিঠাপুকুর থানার অন্তর্গত  পায়রাবন্দ গ্রামে  রোকেয়ার জন্ম হয়।

" রোকেয়ার যখন জন্ম হয়েছে তখন, যখন এদেশের নারী শিক্ষা শুধু মাত্র ধর্মীয় শিক্ষার নামে কোরআন শিক্ষায়ই সীমাবদ্ধ ছিল; তবে সেটাও মক্তব কিংবা মাদ্রাসায় নয়, গৃহ শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত পাড়ার মসজিদের মৌলভীরাই ছিল এসব ধর্মীয় গুরু। বলতে গেলে নারী সমাজ তখন অন্ধকারে ডুবে ছিলো। বাইরের জগৎ সম্পর্কে তাঁদের কোনো ধারণাই ছিলনা। কারণ গোটা মুসলমান সমাজই তখন নারী তো দূরের কথা পুরুষের জন্যেও শিক্ষাকে প্রয়োজনীয় মনে করতে শুরু করেনি। আর নারীকে ঘরের ভিতর বন্ধ করে রাখাই ছিলো তৎকালীন প্রথা। এই প্রথা প্রচলনকারীরা মনে করত এটাই হলো নারীর নিরাপত্তা বিধানের একমাত্র উপায়।  পারিবারিক বাঁধা নিষেধ এতই প্রবল ছিলো যে গৃহ বন্ধী নারীরা আপন বড় ভাইদের সঙ্গেও যখন তখন সাক্ষাৎ পর্যন্ত করতে পারতো না।  সুতরাং, বাইরের আলো যাদের নিষেধ ছিলো তাঁরা শিক্ষার আলো দেখবে কেমন করে? অন্ধকারাচ্ছন্ন এই সময়ে শিক্ষার কারণে রোকেয়া অনুভব করেন নারীদের অব্যাহতি দিতে হলে প্রয়োজন নারী জাগরণ। কারণ ধর্মীয় অনুশাসন ও সামাজিক বাঁধা -নিষেধ অতিক্রম করতে না পারলে এই জাগরণ সম্ভব নয়।  আর শিক্ষাই হচ্ছে সেই শক্তি, যা নারীকে পথ দেখাতে পারে, জয় করতে পারে কুসংস্কারের অমূলক ভীতি,নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে মানুষ হিসেবে। সে কারণে মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন, প্রতিষ্ঠা করেছেন নারী সংগঠন। স্কুল প্রতিষ্ঠা ও নারী সংগঠনের পাশাপাশি তিনি বাংলা এবং ইংরেজিতে আকাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। এসব গ্রন্থে তিনি নারীর সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থা বর্ণনা করার পাশাপাশি নারী সমাজকে জেগে উঠতে আহ্বান করেছেন।বিরূপ সমালোচনা ও নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার মুখেও তিনি কখনোই নারী শিক্ষার লক্ষ্য থেকে পিছু হটেনি। বরং পর্দাপ্রথা ও শিক্ষাবিমুখ মুসলমান মেয়েদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্যে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করেছেন। সমাজের কুসংস্কার ও জড়তা দূর করার জন্য তিনি অসাধারণ পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও হৃদয়গ্রাহী গদ্য রচনা করেন। তাঁর রচনাগুলো সমাজ জীবনের গভীর উপলব্ধি থেকে উৎসারিত । নানা রকম উপমা ও রূপকের সাহায্যে যথাযথ ও তীব্র শ্লেষাত্মক ভাষায় আবার কখনও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের সাহায্যে বা হাস্য রসের মাধ্যমে পরিবেশিত নারীর লাঞ্ছনা ও দুর্দশার বাস্তব চিত্রের পাশাপাশি তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছেন নারী জাতিকে এবং উদ্বুদ্ধ করেছেন নারী জাতিকে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, রোকেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন এবং নারী সংগঠন করেছেন নারীদের অধিকার আদায়ের জন্যে এবং সমাজকে সংস্কার করে সুন্দর রূপ দেওয়ার জন্যে, কিন্তু তাঁর বই সমাজ-সংস্কারে  কি ভুমিকা পালন করতে পারে? বই কি আসলেই ভুমিকা পালন করতে পারে? একটুখানি কলমের কালি কী সমাজ কে পরিবর্তন করতে পারে?

তাহলে তাঁদের জন্যে আমার উত্তর থাকবে- হ্যাঁ, অবশ্যই পারে, অবশ্যই পারে,অবশ্যই পারে। কেননা আপনি আগের ইতিহাস দেখলে বুঝতে পারবেন লেখকদের প্রতিবাদী লেখনির জন্যে অনেককে জীবন দিতে হয়েছে, অনেকে জেল খেটেছেন। আপনি যদি এই মুহুর্তে উল্টা পাল্টা কিছু লিখে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করেন তাহলেই অনেকটা আন্দাজ করতে পারবেন  আর আমি বিশ্বাস করি প্রতিটা ভালো বইয়েই বিশুদ্ধ আত্মা লুকিয়ে আছে। যখন বইটি পড়া হয় তখন মানুষের চিন্তা ভাবনা সুন্দর হয়। কোনো বইয়ে যদি কারো অসুবিধা কিংবা করুণ কাহিনি এবং কারাবন্ধীর জীবন সম্পর্কে  লেখা হয় তাহলে সেই বইটি পড়ার সময় নিজেকে সেই করুণ পরিস্থিতিতে রেখে অন্যের কষ্টটা উপলব্ধির করা যায়৷ যার ফলে পাঠকের মনের পরিবর্তন হয়,আর মনের পরিবর্তন হলেই আশেপাশের পরিবেশ, সমাজ, দেশ ও পৃথিবী সবকিছুই  পরিবর্তন হয়।

ছোটবেলায় বড়বোন করিমুন্নেসা রোকেয়াকে বাংলা শিক্ষায় সাহায্য করেন।পরে তিনি বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের তত্ত্বাবধানে ইংরেজি শেখেন।

বিহারের ভাগলপুরের অধিবাসী খান বাহাদুর সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে তারঁ সাথে ১৮৯৮ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সী রোকেয়ার বিয়ে হয়। তাঁরপর তিনি রোকেয়া খাতুন থেকে হন " রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন" (মিসেস আর.এস.হোসেন)।

ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট স্বামীর সংস্পর্শে এবং তাঁর সহায়তায় ইংরেজি ভাষা এত ভালোভাবে রপ্ত করেন যে, স্বামীর সরকারি কাজে অর্থাৎ বিভিন্ন লেখালেখিতে তিনি স্বামীকে সাহায্য করতেন৷ স্বামীর উৎসাহে ও অনুপ্রেরণায় রোকেয়ার জ্ঞানার্জনের পথ অধিকতর সুগম হয়।

রোকেয়ার সাহিত্য জীবন শুরু হয় তাঁর স্বামীর অনুপ্রেরণায়। তিনি  ১৯০২ খ্রীস্টাব্দে "পিপাসা" রচনার মধ্য দিয়ে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন।

রোকেয়ার গ্রন্থসমুহঃ

নাম

প্রকাশকাল

মতিচূর -প্রথম খন্ড

১৯০৪

মতিচূর -দ্বিতীয় খন্ড

১৯০৭

সুলতানার স্বপ্ন

১৯০৮

পদ্মরাগ

১৯২৪

অবরোধবাসিনী

১৯৩১

 

এছাড়া একাধিক ছোটগল্প ও রম্য রচনা রয়েছে তাঁর।

 

সমাজ-সংস্কারে তাঁর সাহিত্যঃ

(মতিচূর প্রথম খন্ড)  মূলত বিভিন্ন প্রবন্ধের সংকলন গ্রন্থ।  সবগুলি প্রবন্ধের বিষয়ই হচ্ছে তৎকালীন মৃত সমাজ। সেই সমাজের ক্ষতগুলি তিনি চিহ্নিত করেছেন এবং চিহ্নিতকরণ প্রকিয়ায় তাঁর যে ক্ষমতার পরিচয় পাওয়া যায় তা সত্যিই অসাধারণ। তিনি নারী ও পুরুষের সামাজিক অবস্থানও তুলে ধরেছেন।

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার বলেন, "সমাজ সংস্কার করা এক কথা, আর সমাজকে বেদম চাবুক মারা আর এক কথা। চাবুকের চোটে সমাজদেহে ক্ষত হইতে পারে। কিন্তু তা দ্বারা সমাজের কোনো ক্ষতি বা অভাব পূরণ হয় না। মতিচূর এর রচয়িত্রী কেবল ক্রমাগত চাবকাইতেছেন...। তিনি যদি বিদ্বেষহীন ভাষায় নারী জাতির দুঃখের কাহিনী বিবৃত করিতে পারেন তাহা হইলে সমাজে রক্ষণশীলত্বের বন্ধন আপনা-আপনিই শিথিল হইয়া আসিবে"

এ বক্তব্যটিতে বুঝাই যাচ্ছে রোকেয়া কতটা স্পস্ট  ভাবে সাহসের সাথে  সমাজের অনাচারের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন। এই গ্রন্থে 'গৃহ ও পিপাসা' প্রবন্ধে যে সমাজ চিত্র তুলে ধরেছেন তা যথাযত।

মতিচূর দ্বিতীয় খন্ডে বর্ণিত হয়েছে নারীর ব্যথা ও দুর্দশার কথা। তর্কে তিনি যেসব যুক্তি উপস্থাপন করেছেন তা যে কেবলই তর্ক নয় তা গ্রন্থটি পাঠ করলেই অনুধাবন করা সম্ভব। এই গ্রন্থের প্রবন্ধগুলির মধ্যে "সুলতানার স্বপ্ন "একটি রূপকধর্মী ব্যঙ্গাত্মক রচনা। প্রবন্ধ ছাড়াও এই গ্রন্থে রয়েছে একাধিক গল্প ও রূপক কাহিনী যেমনঃ ডেলিশিয়া হত্যা, সৌর জগৎ  জ্ঞানফল, নার্স নেলী, নারী সৃষ্টি ও মুক্তিফল।  'নার্স নেলী ' গল্পে জীবনের অন্য একটা দিক তুলে ধরেছেন। তিনি এখানে বাইরের জগৎ সম্পর্কে সাবধান হওয়ার জন্যে নারীকে সতর্ক করেছেন। সেই সাথে সংসারের শান্তি ও পবিত্রতা রক্ষার জন্যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাকীগুলিতে নারীর মর্যাদা রক্ষা ও নারীর শক্তি নিয়ে লিখেছেন।রোকেয়া অনুভব করেছিলেন যে নারীকে যদি যথাযথ   স্থানে প্রতিষ্ঠিত করা না যায় তাহলে সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়।

পদ্মরাগ উপন্যাস:

"পদ্মরাগ" একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসের ভূমিকা লিখতে  গিয়ে কলকাতার ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজের অধ্যাপক বিনয়ভূষণ সরকার লিখেন, "কি হিন্দু, কি মুসলমান, কি খ্রিস্টান সকল সমাজেরই অনেক ক্ষতস্থান দেখিয়া মর্মে ব্যথা অনুভব করিতে হইবে। গ্রন্থকর্ত্রী শুধু ক্ষতস্থানে  আঙ্গুলি নির্দেশ করিয়াই আপনার কর্তব্য শেষ করেন নাই-তারিণীভবনের পরিকল্পনায় তিনি ব্যাধির সমাধানেরও ইঙ্গিত করিয়াছিলেন।"

এই উপন্যাসে লেখিকা তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে আদর্শ,কর্মপদ্ধতি ও শিক্ষা সম্পর্কে যে আলোচনা করেছেন তা সত্যিই খুব নিখুঁত, যা মানব জীবনের আদর্শ  হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রলোভনকে জয় করে মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করাই হচ্ছে তারিণীভবনের শিক্ষা। আর শিক্ষার মুক্ত আবহাওয়া ফলাফলই হচ্ছে এই উপন্যাসের সিদ্দিকার চারিত্রিক দৃঢ়তা ও শক্তি।

 

সুলতানার স্বপ্নঃ

 

Sultana's Dream(সুলতানার স্বপ্ন) মূলত একটা রূপক কাহিনী যা গল্পের আদলে একটা রূপক কাহিনী বর্নিত হয়েছে।তিনি যেভাবে নারী পুরুষের সমকক্ষতার আর্দশের কথা লিখে গেছেন তা আজকের দিনে নারী সমাজের জন্য একটা আদর্শ। তাঁর অসামান্য একটা দূরদৃষ্টি ছিল। যার পরিচয় আমরা পাই তাঁর 'সুলতানার স্বপ্নে' যেখানে তিনি বলেছিলেন -যাহা যাহা পুরুষ পারিবে, তাহাই নারী পারিবে

আজ ২০২১  খ্রীস্টাব্দে  নাররীরা রান্নাঘর থেকে সংসদ পর্যন্ত রয়েছে মন্ত্রী, প্রধান মন্ত্রী, শিক্ষকতা,ডাক্তা,প্রকৌশলী,আইন পেশা সব জায়গায়ই এখন নারীদের বিচরণসমাজকে সংস্কার করে এই অবস্থানে আনতে অনেক সময় পার করতে হয়েছে৷ অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছেসেই সমাজ-সংস্কারে নবাব ফয়জুন্নেছা ও রোকেয়া সাখাওয়াত হোসনের ভুমিকা অন্যন্য

 

 

তথ্যসূত্রঃ

.bangladesh.gov.bd

. নারী-সাম্যবাদী-কাজী নজরুল ইসলাম

.Dailyinqilab

.পুর্বোক্ত

.BBC

.Bhorerkagoj

.BBC

৭. রোকেয়া রচনাবলী ;ভূমিকা

০৮. নিরীহ বাঙালি,লেখক পরিচিতি ;মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য(নবম-দশম শ্রেণী) ;জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ৬৯-৭০, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা,ঢাকা; প্রথম প্রকাশ-২০১২;পৃ-৪৬

 

 

 

 

তথ্য সহায়িকাঃ

 

📖 মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য( নবম-দশম) শ্রেণির পাঠ্য বই; নবেম্বর-২০১২

📖 সাহিত্য পাঠ( একাদশ-দ্বাদশ)শ্রেণির পাঠ্য বই; জুলাই-২০১৫

📖রোকেয়া রচনাবলি-বাংলা একাডেমি

📖 অনলাইন পত্রিকা,বাংলাপিডিয়া,উইকিপিডিয়া  এবং অন্যান্য  ব্লগ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url